Logo
সোমবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
ক্ষুদ্ধ দলীয় ত্যাগী নেতা-কর্মী ও স্বজনরা

কালিয়া উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি হত্যা মামলার প্রধান আসামি পেড়লী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি পদ পেতে মরিয়া প্রার্থী পেতে দৌড়ঝাঁপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৭ মার্চ, ২০২৩, ০২:১৭ পিএম
কালিয়া উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি হত্যা মামলার প্রধান আসামি পেড়লী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি পদ পেতে মরিয়া প্রার্থী পেতে দৌড়ঝাঁপ


নড়াইলের কালিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জেল শেখ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আনিসুল ইসলাম বাবু পিরোলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।এতে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পিরোলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা-কর্মী ও নিহতের স্বজনরা।স্থানীয় আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা-কর্মী ও নিহতের স্বজনরা আশংকা প্রকাশ করে বলেছেন আনিসুল ইসলাম বাবুকে পিরোলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ দেয়া হলে বাবু ও তার অনুসারীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠবে এবং পিরোলীতে নতুন করে দলীয় নেতা-কর্মীদের জীবনাশংকা হুমকির মুখে পড়বে।
নিহতের স্বজন ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ মে সকাল ১০টার দিকে পেড়লীর নিজ বাড়ি থেকে কালিয়া যাওয়ার পথিমধ্যে নির্মমভাবে খুন হন কালিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জেল শেখ।এ সময় মোফাজ্জেল শেখের ছেলে সাদ্দাম, মোফাজেলের ভাই শামীমসহ নিকটজনেরা গুরুতর আহত হন প্রতিপক্ষের হাতে।সাদ্দামের ডান পা কেটে ফেলার কারণে চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তিনি।এছাড়া অনেকেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে পরিবারের বোঝা হয়ে বেঁচে আছেন।এ ঘটনায় আনিসুল ইসলাম বাবু ও তার চাচা নজরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে বিগত ২০১৭ সালের ২৭ মে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়।এ মামলায় মোট ৩২জনকে এজাহারভূক্ত আসামি করা হয়।মামলাটি বর্তমানে নড়াইল জেলা দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

 

নিহত মোফাজ্জেল শেখের ছোট ভাই শামীম শেখ জানান,বিএনপি দলীয় লোকজন নিয়ে আনিসুল ইসলাম বাবুর চলাফেরা। আমার ভাই মোফাজ্জেল শেখ হত্যাকান্ডে ৩২ আসামির মধ্যে ৯-১০ আসামি বাদে সবাই বিএনপির নেতা-কর্মী।আমার ভাই ছিলেন আওয়ামীলীগের একজন ত্যাগী নেতা।দলকে সংগঠিত করতে তিনি আমৃত্যু কাজ করে গেছেন।জীবদ্দশায় ফাজেল আহম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং হাবিবুল আলম বীরপ্রতিক মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য হিসাবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।ভাইয়ের দলীয় ও সামাজিক জনপ্রিয়তা চিরতরে স্তব্দ করে দিতে প্রতিপক্ষ আনিসুল ইসলাম বাবু ও তার পক্ষীয় লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংস ও নির্মমভাবে কুপিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করে। এলাকায় রাজত্ব কায়েমসহ বিএনপি দলীয় লোকজনদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে এবং মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আনিসুল ইসলাম বাবু পিরোলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
পিরোলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক আহবায়ক টিপু সুলতান জানান, ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আওয়ামীলীগের কমিটিতে কোন বিতর্কিত ব্যক্তিকে আনা ঠিক হবে না।আওয়ামীলীগ নেতা মোফাজ্জেল হত্যাকান্ডের আসামি আনিসুল ইসলাম বাবুসহ অন্য কোন বিতর্কিত ব্যক্তিকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের পদপদবী দেয়া হলে দলের ইমেজ চরমভাবে ক্ষুন্ন হবে।
কালিয়া উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মো: ইকবাল হোসেন বলেন,আওয়ামীলীগ নেতা মোফাজ্জেল শেখ হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামি আনিসুল ইসলাম বাবু পিরোলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ পেতে তোড়জোর চালাচ্ছেন।আমরা দলীয় লোকজন কোন বিতর্কিত ব্যক্তিকে দলের কোন পদে দেখতে চাই না।দলের একজন ত্যাগী নেতাকে নৃশংসভাবে খুনের মামলার আসামি বাবুকে  দলীয় পদ দেয়া হলে নেতৃবৃন্দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে।মোফাজ্জেল হত্যাকান্ডের আসামি হওয়ার কারণে বিগত ইউপি নির্বাচনে আনিসুল ইসলাম বাবু চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে দলীয় লোকজনসহ স্থানীয় জনগণ বাবুকে প্রত্যাখ্যান করায় শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। 
এ ব্যাপারে আনিসুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,যে কোন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে পক্ষ-বিপক্ষ সৃষ্টি হয়।পিরোলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে আমি আদৌ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো কিনা সে বিষয়ে এখনো পুরোপুরিভাবে সিদ্ধান্ত নেইনি। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের দলীয় উদ্ধর্তন নেতৃবৃন্দ পিরোলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটির ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেটা মেনে নিব।