Logo
সোমবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
মরদেহের পচনরোধে দিতে হয়েছে বরফ

দুই থানার টানাপোড়ন, ১৮ ঘন্টার পর মিললো ছাড়পত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

অভয়নগর ( যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল, ২০২৩, ০৭:২৬ পিএম
দুই থানার টানাপোড়ন, ১৮ ঘন্টার পর মিললো ছাড়পত্র





যশোরের অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী নড়াইল সদর উপজেলার চাকই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বুধবার সন্ধ্যায় গরুবোঝাই ভটভটির নসিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী মাদ্রাসা ছাত্র হযরত আলী মিনা (১৮) মৃত্যু হয় গত বুধবার সন্ধায়।

নিহত হযরত আলী নড়াইল সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের ফারুক হোসেন মিনার বড় ছেলে। গত বুধবার সন্ধায় দুর্ঘটনার পর হযরত আলীকে আনা হয় অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক হযরত আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত হযরত আলীর মৃতদেহ নিয়ে বেশ বিড়ম্বনার পড়তে হয় স্বজনদের। দুর্ঘটনায় স্থানটি দুই থানার সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় দুই থানার টানপোড়নে তার লাশ হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে ছিল দীর্ঘ ১৮ ঘন্টা। লাশটির পচন রোধে লাশে দিতে হয়েছে বরফ। 
তীব্র গরমে শোকাহত ওই পরিপার লাশের ছাড় করনের জন্য অভয়নগর থানা, নড়াইল থানা ও নড়াইল জেলা প্রশাসকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ১৮ ঘন্টা পর লাশ দাফনের ছাড়পত্র পায়।এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হযরত আলী মিনা গত বুধবার সন্ধ্যায় নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর—নওয়াপাড়া সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে নওয়াপাড়ায় ফিরছিলেন। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তিনি চাকই গ্রামের চাকই পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে গরুবোঝাই একটি ইঞ্জিন চালিত ভটভটির ধাক্কায় মারাত্মক আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রাত পৌনে ৯ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত  ঘোষণা করেন।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রকিবুল ইসলাম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই হযরত আলী মিনার মৃত্যু হয়।
মৃত হযরত আলীর বড়ভাই জিনারুল মিনা জানান, তার ভাই মারা যাওয়ার পর সে একবার অভয়নগর থানায় একবার নড়াইল থানায় ধন্না দেয়। দুই থানার টানাপোড়নে পড়ে তার ভাইয়ের লাশ ছাড় করতে পারেনি। তীব্র গরমে ও রোজা রমজানের কারনে তারা আট থেকে দশজন লোক অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান করে হয়রানির শিকার হয়েছে। পরে নড়াইল জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ছাড় পত্র নিয়ে অভয়নগর থানায় দেখালে বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় পুলিশ লাশ ছেড়ে দেয়।
অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্য একেএম শামীম হাসান বলেন, ‘মৃতের আত্মীয়রা লাশ ছাড় করনের জন্য নড়াইল থানায় কোন মামলা করতে চায়নি। আমরা নড়াইল থানায় বার্তা পাঠিয়েছি। নড়াইল থানায় মামলা না থাকায় এবং ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্র পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় লাশ ছেড়ে দেওয়া হয়।
নড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমি অভয়নগর থানা থেকে বুধবার রাত দুইটার সময় এ সংক্রান্ত বার্তা পেয়েছিলাম কিন্তু প্রতিউত্তর দেওয়ার আগেই তা আবার তুলে নেওয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ৫টা ২৬ মিনিটে আবার আমাকে বার্তা পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয় মৃতর নামে কোন মামলা আছে কি না। সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে আমি তার নামে কোন মামলা নেই,  বার্তা পাঠাই। কিন্তু এত পরে লাশ ছাড় করা কেনা হলো তা বলতে পারবো না।