নড়াইল পৌরসভা কবরস্থানের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। দীর্ঘকাল ধরে পৌর কবরস্থানের পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন করা হয়নি। সে কারণে কবরস্থান অনেকটা এলোমেলো অবস্থায় ছিল। টেকসই উন্নয়ন ও অব্যবস্থাপনার অভাবে কবরস্থানের কোন শৃংখলা নেই। নেই কোন সৌন্দর্য্য। দাফনে নেই সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা।
দীর্ঘদিন ধরে পৌরবাসী দাবি করে আসছেন কবরস্থানের টেকসই উন্নয়ন করা হোক। বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও জেলা ইমাম সমিতির নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিনের দাবি, এলোমেলা ভাবে পৌর কবরস্থানে কবর পাকা করণ বন্ধ করা হোক। বিভিন্ন টানাপোড়েনে এ কাজটি কোনো মেয়রই করতে পারেননি। নিবার্চনী ওয়াদা থাকায় বর্তমান মেয়র আঞ্জুমান আরা পৌরবাসীর এ প্রাণের দাবি তথা জনদাবি পূরণে সচেষ্ট হন। তিনি জেলার শীর্ষ আলেম ও ধমীর্য় নেতাদের ডেকে এবং পৌরসভার সকল মসজিদের ইমামদের ডেকে পৌর কবরস্থানের উন্নয়নে দফায় দফায় সভা করেন। সেখানে ধর্মীয় নেতা, জেলা ইমাম সমিতির নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, ইসলামী চিন্তাবিদ, শ্রমিক, জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
জেলার খ্যাতনামা মুফতি, মোহাদ্দেস ও মুফাচ্ছিরবৃন্দ ঐক্যমত পোষণ করে পৌর মেয়রের নিকট কবরস্থানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দাফন কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান। এক্ষেত্রে সকল কবর ভেঙ্গে মাটি সমতল করা খুবই জরুরি। যেহেতু ইসলামে কবর পাকা করা নিষেধ। তাই পাকা করা অথার্ৎ, বাধায় করা কবর রাখার কোন প্রয়োজন নেই। তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনে বাধায় করা কবর সংশ্লিষ্টদের সাথে পৌর কর্তৃপক্ষকে কথা বলার অনুরোধ করেন। তিনি মোতাবেক পৌর কতৃর্পক্ষ যথাসাধ্য চেষ্টা করেন সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলার। যাদের সাথে পৌর কতৃর্পক্ষ কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন, তাদের সকলেই ইসলামী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সার্বিক স্বার্থে কবরগুলো ভেঙ্গে পুনরায় সুশৃঙ্খলভাবে দাফন কার্যক্রম শুরুর প্রস্তাব দিয়েছেন। তাদের প্রস্তাবে এবং ইসলাম ধর্মীয় নেতাদের অনুরোধে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কবরস্থানের সকল নিশানা ভেঙ্গে কবরস্থান সমতল করে সুশঙ্খলভাবে দাফন কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছেন। গতকাল কবরস্থানের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করায় সর্বমহলে মেয়রের এ মহান উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে।
মাওলানা, মুফতি ও মোহাদ্দেছ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘কবরস্থানের মধ্যে বিশেষ নিশানা দেয়া বা কবর পাকা করে পৃথক রাখার কোন আবশ্যকতা ইসলামে নেই। এ রকম কাজ করলে কবরবাসী কোনো সুবিধা পাবেন না। তার নিকটজনেরা তার জন্য দোয়া করলে সেটাই কাজে লাগবে। কবর পাকা করলে কবরস্থানের জায়গা স্বল্পতা দেখা দেয়। দাফনের শৃংখলায় বিঘ্ন ঘটে। তাই এ ধরনের কাজ হতে সকলেরই বিরত থাকা উচিৎ।’
নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা জানান, পৌরসভার সাধারণ মুসলমান ও ইসলাম ধর্মীয় নেতাদের অনুরোধে পৌর কবরস্থানের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। পবিত্রতা রক্ষা করে কবরগুলো ভেঙ্গে সমতল করে সম্পূর্ণ নতুনভাবে দাফন কার্যক্রম শুরু করা হবে। কবরস্থানে মাটি দিয়ে ভরাট করে প্রয়োজন মত উঁচু করা হবে। এ কাজটি করার জন্য ইমাম সাহেবরা যে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন, তা শতভাগ মেনেই কাজ করা হবে। কবরস্থানে যে সব সুবিধা থাকা আবশ্যক তার সকল ব্যবস্থা করা হবে। প্রায়ই কবরস্থান নিয়ে মানুষ নানা অভিযোগ তোলেন। বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেন। কবরস্থানটি পূণার্ঙ্গভাবে নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। উন্নয়ন কাজটি সবার্ধিক গুরুত্ব দিয়ে করা হচ্ছে। কাজটি সমাপ্ত হলে পৌরবাসীর দীর্ঘদিনে দাবি পূরণ হবে জানান মেয়র।